রবিবার, ১৯ মে, ২০২৪
ঢাকা রবিবার, ১৯ মে, ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
The Daily Post

ডুমুরিয়ায় মিষ্টি পানিতে বাগদা চাষে তবিবুরের সাফল্য  

ডুমুরিয়া (খুলনা) প্রতিনিধি

ডুমুরিয়ায় মিষ্টি পানিতে বাগদা চাষে তবিবুরের সাফল্য  

খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার হাসানপুর গ্রামের চিংড়ি চাষি তবিবুর রহমান তার মিষ্টি পানির ঘেরে আধা নিবিড় পদ্ধতিতে বাগদা চিংড়ি চাষ করে এলাকায় সাফল্যের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। পাশাপাশি উপজেলায় শ্রেষ্ঠ চিংড়ি চাষির পুরস্কারও পেয়েছে।

সফল চাষি ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ডুমুরিয়া উপজেলার রুদাঘরা ইউনিয়নের হাসানপুর গ্রামের চিংড়ি চাষি তবিবুর রহমান জোয়াদ্দার (৪৬) নিজের ১ একর ২০ শতাংশ জমিতে দীর্ঘদিন যাবৎ প্রচলিত পদ্ধতিতে মিষ্টি পানিতে গলদা চিংড়ি ও রুই-কাতলা জাতীয় মাছের চাষ করতেন। 

২০২১ সালে তিনি বাগদা চাষের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কিছু লোকের পরামর্শ নিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে ওই চিংড়ি ঘেরের মিষ্টি পানিতে বাগদা চাষের সিদ্ধান্ত নেন। প্রথমে ওই ঘেরের ৮ শতাংশ ক্যানেল (খাল) জীবানুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করে বাজার থেকে ৫০ কেজি ওজনের ৫ বস্তা লবণ এনে ক্যানেলের পানিতে ঢালেন। 

এর ৩ দিন পরে উন্নত জাতের ৫০ হাজার বাগদা রেনু ছাড়েন। ওই ক্যানেলে ১৫ দিন ধরে খাবার দিয়ে পরিচর্যার পর বাগদা পোনাগুলে ১ ইঞ্চির মত বড় (লম্বা) হওয়ার পর বোরিং থেকে মিষ্টি পানি তুলে আস্তে আস্তে ঘেরটি ভরে দেন। এরপর ২টি এরেটরের (অক্সিজেন প্লান্ট) মাধ্যমে পানিতে অক্সিজেনের মাত্রা ঠিক রাখার পাশাপাশি একটানা ৯০ দিন যাবৎ সিপি খাবারের সঙ্গে সামান্য লবণ মিশিয়ে খাওয়ানোসহ নিয়মিত ওষুধ-পরিচর্যা শেষে মাছ ধরেন। 

সে বছর তিনি গড়ে ৮৮০ টাকা কেজি দরে আড়তে ২৮ মন বাগদা (অনুমান ৩৫ হাজার পিস) বিক্রি করে ১২ লাখ টাকা আয় করেন। এরমধ্যে ৮ লাখ টাকা খরচ বাদে ৪ লাখ টাকা লাভ হওয়ায় চাষির সামনে স্বপ্নের নতুন দুয়ার খুলে যায়।

ইতোমধ্যে ১০১ দিনের মাথায় সরেজমিনে বাগদার বাম্পার ফলন দেখতে ও চাষিকে উৎসাহিত করতে গত ৪ আগস্ট তার খামার পরিদর্শন করেন, সাবেক মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী ও খুলনা- ৫ এমপি নারায়ণ চন্দ্র চন্দ। ওই সময় ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার শরীফ আসিফ রহমান ও সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবুবকর সিদ্দিকির সামনে ছোট খ্যাপলা-জাল দিয়ে ঘেরে খ্যাপন দিলে প্রতিবারে ৫০-৬০ পিস বড়-বড় বাগদা চিংড়ি উঠতে দেখা গেছে।

এ প্রসঙ্গে তবিবুর রহমান বলেন, এখন আমার স্বপ্ন, মিষ্টি পানিতে বাগদা-চিংড়ি চাষের দৃষ্টান্ত তুলে ধরে দেশের মানুষকে উদ্বুদ্ধ করবো। পাশাপাশি আমি জাতীয় পুরষ্কারও জিততে চাই। সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবুবকর সিদ্দিক বলেন, আশা করছি তবিবুরের ঘের থেকে এ বছর ২৮শ কেজি বাগদা ধরা যাবে। 

টিএইচ